কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি: মোঃ ইমরান হোসেন ইমু
কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে চুনকুটিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক বিশাল রাজনৈতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ রায়।
তিনি বলেন, “সংস্কারের নামে যদি কোনো কুসংস্কার চালু করা হয়, বিএনপি তা মেনে নেবে না। জনগণের অধিকার হরণ করে কুসংস্কারের সংস্কার করা হলে বিএনপি নেতারা বসে থাকবে না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ১৭ বছর ধরে নির্বাচনের জন্য লড়াই করছি। অনেকেই বলেন বিএনপি ১৬ বছরে কিছুই করতে পারেনি, আমি বলি — বিএনপি চাইলে ১৬ দিনেই করতে পারে, তবে আমরা ভদ্রলোক ইউনুস সাহেবের মতো হুট করে কিছু করি না।”
ছাত্রদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ রায় বলেন, “আজকের ছাত্ররাই আগামী দিনের বাংলাদেশ নির্মাণ করবে। তবে রাজনৈতিক সুনাম রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব।”
বিশেষ অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা সুখের ঘরে দাঁড়িয়ে ভুলে গেছি নিপীড়নের ইতিহাস। যারা এখন সংস্কার সংস্কার করছে, তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা অনুপাতিক নির্বাচন চায়— যা দেশের জন্য বিপজ্জনক। বিএনপি জনগণের ভোটের সরকার চায়।”
বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, “শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। এখন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। ১৭ বছর ধরে আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি, এবার তাকে পার্লামেন্টে পাঠাবো।”
তিনি আরও বলেন, “জামায়াত আর আওয়ামী লীগ এক সুতায় গাঁথা, তাদের মত পরিবর্তন হয় মুহূর্তে। জনগণ তাদের আর বিশ্বাস করে না। ভারতের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে—বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল রাখা।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, “বিএনপির সমাবেশ হলেই আওয়ামী লীগ শাস্তিস্বরূপ পাল্টা কর্মসূচি দিতো, যেখানে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা অংশ নিতো। হাসিনার আমলে ন্যায়বিচার ছিল সোনার হরিণ।” তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “ভারত শেখ হাসিনাকে বেশি দিন আড়াল করে রাখতে পারবে না, প্রয়োজনে তাকে এনে দাঁড় করানো হবে।”
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, “যারা এখন পিআর পিআর করছে, তাদের জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির ৩১ দফাই যথার্থ সংস্কার। আমাদের সংস্কারে আপনাদের সাহায্য লাগবে না।”
সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী।
এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন:
বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সুলতান নাসের, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবু ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি পাবেল মোল্লা,কৃষক দলের সভাপতি জুয়েল মোল্লা,অ্যাডভোকেট সেলিম চৌধুরী, ওমর শাহনেওয়াজ, অ্যাডভোকেট মাকরাম হোসেন সাজ্জাদ,খোরশেদ আলম জমিদার, নূর হোসেন নূরু, হাজী আনোয়ার হোসেন,জয়নাল আবেদিন বাবুল, আরসাদ রহমান সপু, ঈশা খা, আলী হোসেন আলী,আসাদ খান, হাজী মাস্তান, মশিউর রহমান চঞ্চল, এনাতুল্লাহ,মাহবুব আলম মামুন, যুবদল নেতা মাসুদ আলম স্বাধীন,শ্রমিক নেতা মো. শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. সোহেল রানা ও শামীম,জাসাস নেতা জাহাঙ্গীর আলম, তাতীদল নেতা মো. হীরামহিলা দলের নেত্রী রাজিয়া বেগম প্রমুখ।
বিশাল মিছিল ও গণজমায়েতের মাধ্যমে সমাবেশ প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।
বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি হাজী আনোয়ার হোসেন, যিনি মিছিল সহকারে সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখযোগ্য বার্তা ছিল— সংস্কারের নামে কুসংস্কার নয়, চাই জনগণের সরকার, তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার।