নিউজ ডেস্ক:-
বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার ফেরানোর আন্দোলন শুধু দেশের ভেতরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বিদেশের মাটিতেও প্রবাসীরা প্রাণপণ সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু সেই সংগ্রামের মাশুল আজও তাদের পরিবার ও জীবনে অসহনীয় যন্ত্রণা হয়ে রয়েছে। প্রশ্ন জাগছে—এই রক্তক্ষয়ী ত্যাগের মূল্যায়ন কোথায়? হাইকমান্ডের দৃষ্টি কি কখনো তাদের দিকে ফিরবে?
২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল—সৌদি আরব বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর এক ষড়যন্ত্রের সূচনা হয়। ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারীর ইন্ধনে সাজানো মামলার ফাঁদ পাতা হয়। পরবর্তীতে ৩১ মে মামলাটি কার্যকর করে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি প্রবাসী নেতাদের গ্রেফতার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।
এরপর শুরু হয় ইতিহাসের এক বিভৎস অধ্যায়। প্রায় সাড়ে ১১ মাস রিমান্ডের নামে চালানো হয় ভয়াবহ নির্যাতন। শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় জর্জরিত করে আদায় করতে চাওয়া হয় মিথ্যা ও বানোয়াট জবানবন্দি। তদন্তকারী কর্মকর্তারা সাজানো কাহিনী নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন। অথচ প্রকৃত সত্য ছিল—এরা অপরাধী নয়, এরা গণতন্ত্রকামী সৈনিক। তাদের একমাত্র অপরাধ ছিল বিদেশের মাটিতে থেকেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে জনমত গঠন করা।
এদিকে এই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে প্রবাসীরা হারিয়েছেন তাদের ব্যবসা, জীবিকার পথ ও প্রবাস জীবনের সংগ্রামী অর্জন। পরিবারগুলো পড়েছে অনিশ্চয়তার অন্ধকারে। অথচ দেশের গণঅভ্যুত্থান ও বিজয়ের পরও তারা সেই ত্যাগের যথাযথ প্রতিদান পাচ্ছেন না। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর যদিও দুইজন জামিনে মুক্ত হয়েছেন, তবুও তাদের অন্তরে দগদগে ক্ষত আজও রয়ে গেছে।
এখন সময় এসেছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার—
গণতন্ত্রের লড়াইয়ে প্রবাসীদের যে আত্মত্যাগ, তা কি শুধুই ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে যাবে?
যারা বিদেশের মাটিতে থেকেও আন্দোলনকে শক্তিশালী করেছেন, তারা কি নতুন বাংলাদেশে বঞ্চিতই থেকে যাবেন?
হারানো ব্যবসা, নষ্ট হওয়া পরিবার, ভেঙে যাওয়া জীবনের ক্ষতিপূরণ কে দেবে?
প্রবাসীরা রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে যেমন অর্থনীতির ভিত গড়েছেন, তেমনি আন্দোলনের ভিতও শক্ত করেছেন। তাদের কান্না উপেক্ষা করা মানে গণতন্ত্রের সংগ্রামকে অসম্পূর্ণ রাখা। তাই হাইকমান্ডের কাছে আহ্বান—প্রবাসীদের ন্যায্য মর্যাদা ও সুবিচার দিন, তাদের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন করুন।