বিদ্যুৎ চন্দ্র বর্মন, বিশেষ প্রতিবেদক:
মালয়েশিয়ার জাজিরা (এম) এসডিএন বি এইচ ডি নামের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আজম (৫০) অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘ ৮ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশি সেলসম্যান মোঃ সোহাগ প্রতিষ্ঠানটির আস্থা ভঙ্গ করে মোট ৬,৮৭,০০০ রিঙ্গিত — যা প্রায় ২ কোটি ৫ লাখ টাকা — আত্মসাৎ করেছেন। এই ঘটনায় মালয়েশিয়ার স্থানীয় থানায় ইতোমধ্যেই প্রতিকারমূলক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আজম।
আর্জিতে আজম বলেন, শেয়ারকৃত বিল ও ক্লায়েন্টদের অর্থ সোহাগ গোপনে নিজের কাছে রেখে প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সোহাগের সহযোগী হিসেবে প্রবাসী শুভ মেহেদী হাসানের নাম উঠে এসেছে। প্রাথমিকভাবে সোহাগের মা জয়নব বেগম ২২ লাখ পরে ১০ লাখ টাকা ফেরত দিলেও বর্তমানে অতিরিক্ত কোনো অর্থ ফেরত দিচ্ছেন না এবং বিভিন্ন টালবাহানার মাধ্যমে সময় কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পর ভুক্তভোগী আজমের পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য সদস্যরাও উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আজম সাংবাদিকদের জানান, “আমি একজন সৎ ব্যবসায়ী। আমার প্রতিষ্ঠানে ৭০–৮০ জন কর্মী কাজ করে। অথচ আমার বিশ্বস্ত সেলসম্যানের কাছেই প্রতারণার শিকার হলাম। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”
বিষয়টিকে গুরুতর অবহেলা হিসেবে দেখছেন আইনজীবী এডভোকেট সাঈদুল হক সাঈদ (সাঈদ), বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (আপিল বিভাগ) ও হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর — আমরা আইনি সহায়তা প্রদান করব এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ও যথাযথ ব্যবস্থার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ ধরনের প্রতারণা থেকে রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, সোহাগের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে তথ্যের জন্য যে কোনো যোগাযোগের নম্বর পাওয়া যায়নি; তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সচেতন মহল মনে করেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কর্মসংস্থান ও ব্যবসায়িক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে অর্থ আত্মসাৎ জাতীয় ভাবমূর্তিকেও ক্ষুণ্ন করছে। ফলে, এমন ধরণের প্রতারণার ঘটনায় কড়া আইনি শাস্তি নিশ্চিত করা ও প্রবাসী কর্মীদের আর্থ-সামাজিক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে অনৈতিক আচরণ প্রতিহত করার জন্য নিয়ম-নীতি আরও শক্ত করার দাবি উঠেছে।
ঘটনায় মালয়েশিয়ায় দায়ের করা অভিযোগের অনুসরণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কনসুলিয়ার সহায়তা প্রভৃতি বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে স্থানীয় আইনগত সূত্র জানাচ্ছে। তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ চলমান রয়েছে।