বিশেষ প্রতিনিধ
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চর এককরিয়া ইউনিয়নের পূর্বকান্দি পশ্চিমপাড় গ্রামে দীর্ঘদিনের ভোগদখলকৃত জমি জোরপূর্বক দখলের অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মোহাম্মদ ইছাহাক সরদারের পরিবার দাবি করেছে, বিগত তিন দশক ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করা জমিতে এখন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দখলচেষ্টা চলছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য তানিয়া বেগম জানান, “আমার বাবা মোহাম্মদ ইছাহাক সরদার ১৯৯৩ সালে পূর্বকান্দি পশ্চিমপাড় মৌজার জে.এল ৩৪, এস.এ ২২১, ২২২, ৩ ও ৪ নম্বর খতিয়ানের অধীনে ৮ গণ্ডা জমি আব্দুল হক মোল্লার কাছ থেকে রেজিস্ট্রিকৃত কবালার মাধ্যমে ক্রয় করেন। একই সঙ্গে আব্দুল হক মোল্লা আরো ১০ গণ্ডা জমি কালিকাপুর গ্রামের আব্দুর রব ফারাজির নিকট বিক্রি করেন, যেটি পরবর্তীতে আমার বাবা দলিলমূলে কিনে নেন।”
পরিবারের দাবি, “ক্রয়কৃত জমির বৈধ মালিকানা নিশ্চিত করে রেজিস্ট্রিকৃত ৩৭০ নম্বর কবালা দলিল সম্পাদন করা হয় ২১/০১/১৯৯৩ তারিখে। সেই থেকে ওই জমি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছি। অথচ এখন আব্দুল হক মোল্লা ও তার সন্তানরা সেই জমি নিজেদের বলে দাবি করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, বিক্রয়ের পর বিএস জরিপের সময় নিজের নামে পুনরায় রেকর্ড করে আব্দুল হক মোল্লা পরে ওই জমি তার সন্তানদের নামে বিক্রি করেন। যা স্পষ্টতই প্রতারণার শামিল। এ নিয়ে এলাকায় মালিকানা নিয়ে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
আইনজীবীর লিখিত মতামতে বলা হয়েছে, “রেজিস্ট্রিকৃত দলিল ছাড়া জমির মালিকানা দাবির কোন ভিত্তি নেই। অরেজিস্ট্রিকৃত বর্গাচুক্তি আইনত গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা সম্পত্তির দখল প্রতিষ্ঠার জন্য উপযুক্ত দলিল হতে পারে না। এই ক্ষেত্রে ইছাহাক সরদারই প্রকৃত মালিক।”
এ বিষয়ে ২০১৩ সালে এছাহাক সরদার জীবিত থাকা অবস্থায় তার কাগজপত্র আটকে রাখার অভিযোগে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি (জিডি নম্বর: ৮৩৭)।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে আব্দুল হক মোল্লার সন্তান—মাহফুজ মোল্লা, মো. সবুজ, মো. মামুনুর রশীদ, মাহামুদা বেগম, ময়না বেগম, ফাতেমা বেগম ও মুন্নী বেগম—জমি দখলের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত আব্দুল হক মোল্লার পুত্র মাসুদ মোল্লা জানান এই জমি আমাদের আমরা পূর্ব থেকেই এ জমি ভোগ দখল করে আসছি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ ও দখলচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ কামনা করছেন তারা।