
মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি!
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট শাখার যৌথ মালিকানা দেওয়ার কথা বলে পার্টনারের ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় মেহেন্দিগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী আল-আশরাফ মোঃ আলীপ।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার বদরপুর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আমার প্রতিবেশী মজিবুর রহমান এর ছেলে মোঃ সাগর হোসেন গত ৩ বছর আগে আমাকে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট শাখার যৌথ মালিকানা দেওয়ার প্রস্তাব করিলে আমি তাতে সম্মতি হই। এক পর্যায়ে অংশিদারিত্বের ২০ লাখ টাকা সাগর ও তার বড় ভাই সাবেক এমপি পঙ্কজ নাথের পিএস ইমরান তাদের পিতা মজিবুর রহমান আমার কাছ থেকে নেয়।
টাকা নিয়ে প্রমাণ স্বরুপ আমাকে দুটি স্ট্যাম্প, দুটি চেক দেয় তারা। একটি চেক সাগরের নামে অপর চেকটি তার বাবা মজিবুর রহমান এর নামে। টাকা নিয়ে ব্যাংক শাখা আজ আনবে কাল আনবে বলে কালক্ষেপণ করে যাচ্ছেন । এজেন্ট শাখা আর আনা হয়নি। এজেন্ট ব্যাংক আনার শুরুতেই গলদ। কিছুদিন যাওয়ার পরে আমাকে পাতারহাট বন্দর ব্যবসায়ী অকিল নাথ এর ছেলে অলক নাথ ফোন দিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেন। সেখানে গিয়ে দেখি পার্টনার সাগর, তার বড় ভাই পিএস ইমরান, আমু এবং অলক নাথ বসে আসেন। ইমরান আমাকে বলে আমার বাবার নামের চেকটি ফেরত দেও। ওই চেকের টাকা এখনি নগদ দিয়ে দিবো। আমি সরল মনে এক পর্যায় চেকটি তাকে দিলে হাতে নিয়ে আমাকে হুমকি ধামকি দিয়ে বলে বিষয়টি কাউকে জানালে খুন জখম করা হবে। পরে টাকা না দিয়ে আমাকে দোকান থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়। আমি তখন তাদের এই প্রতারনার প্রতিবাদ করার সাহস করিনি।যেহেতু তারা তখন ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো। দীর্ঘ তিন বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আমার টাকা ফেরত না দিয়ে তাদের বাড়ি ঘরে তালা ঝুলিয়ে স্বপরিবারে ঢাকায় চলে যান। তারা আমাদের ফোনও রিসিভ করেন না। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে এবং সেনাবাহিনীর কাছে নালিশ করলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
তিনি আরও বলেন, টাকা দেওয়ার কথা বলে সাগরের বাবার চেক ফেরত নিয়ে জালিয়াতি করেছেন সাবেক এমপি পঙ্কজ নাথের ভাতিজা অলক নাথ। তিনি কিছুতেই এর দায় এড়াতে পারেন না। অপরদিকে ভুক্তভোগীর অসুস্থ মা জানান, বিগত ২০২৪’র ৫ আগষ্টের পর আমরা সাবেক এমপি পঙ্কজ নাথের ভাতিজা অলক নাথকে চাপ সৃষ্টি করলে সেখানে বাঁধা সৃষ্টি করেন আসাদুজ্জামান মুক্তা।যিনি আমার আয়ের উৎস কি? এতো টাকা কোথায় পেলাম, আমাকে নানা রকম হুমকি ধমকি দেয়। আমি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের লোক হয়েও তার কাছ থেকে সহানুভূতি পাবার পরিবর্তে লাঞ্ছিত হয়েছি। আমি দলের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট এর বিচার দাবী করছি। ধার দেনা এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে সুদে টাকা এনে এজেন্ট ব্যাংকের পার্টনার হতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। একদিকে সংসারে অভাব অনটন, আরেকদিকে কিস্তির চাপ। টাকার অভাবে ঠিক মতো চিকিৎসা করতে পারছি না। জরাজীর্ণ ঘরে বৃষ্টির পানি গড়ায়। মানবেতর জীবন যাপন করে যাচ্ছি।
গত ৭ মাস আগে ঢাকা জজকোর্টে ভুক্তভোগী মোঃ আলীপ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে স্বপরিবারে এলাকা থেকে পালিয়েছে অভিযুক্তরা। তাদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন এই আসাদুজ্জামান মুক্তা বলে দাবী করেন ভুক্তভোগীর মা শাফিয়া বেগম। এমন আরো একাধিক ব্যক্তি এই পিএস ইমরান ও তার পরিবারের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
অভিযুক্ত সাগরের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।




















