, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) ও আহলে বাইত এর স্বরণে পুরান ঢাকায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।  কেরানীগঞ্জে বিদেশি রিভলবারসহ ২ যুবক গ্রেফতার : বরিশাল জেলা উত্তর কৃষকদলের আহ্বায়ক নলী মোঃ জামাল হোসেন : পরীক্ষিত ও কর্মীবান্ধব নেতা  কেরানীগঞ্জে ফোম কারখানায় আগুন ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল তুগুজকুমালাক ডে উদযাপন: গোসাইরহাটে বিএনপি’র ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু নির্বাচন: ভিপি-জিএস-এজিএস তিন শীর্ষ পদেই শিবির সমর্থিত প্যানেলের জয় সুদূর প্রবাসে থেকেও বিএনপির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন জিয়া সাইবার ফোর্স জেডসিএফ নেতা রবিউল খন্দকার আগামী ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে–আলহাজ্ব আমান উল্লাহ আমান  জিয়া সাইবার ফোর্স জেডসিএফ-এর বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া বিশ্বের কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধান

  • প্রকাশের সময় : ১২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫
  • ১১৭ পড়া হয়েছে

 

আতিকুর রহমান:-

 

বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে—চরম রাজনৈতিক সংকট, জনরোষ, অর্থনৈতিক দুরবস্থা কিংবা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অনেক রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান ক্ষমতা হারিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। কারো কারো এই দেশত্যাগ ছিলো গোপন ও নাটকীয়, আবার কারো কারো ছিলো প্রকাশ্য ও বিতর্কিত। নিচে তেমনি কিছু রাষ্ট্রপ্রধানের সংক্ষিপ্ত তালিকা তুলে ধরা হলো:

 

 

 

🇧🇩 বাংলাদেশ: শেখ হাসিনা

 

বর্তমানে বাংলাদেশে টানা ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা।তার সরকারের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন, স্বৈরাচারী আচরণ ও ভোটবিহীন নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি সমালোচনার ছিল। এরপর ২০২৪ সালে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে ওই বছরের ৫ আগষ্ট তিনি দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন।

 

 

 

🇨🇦 কানাডা: জাস্টিন ট্রুডো

 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নানা দুর্নীতির অভিযোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং জনমনে হতাশার কারণে তাঁকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে তিনি ২০২৫ সালে পদত্যাগ করেন।

 

 

 

🇸🇾 সিরিয়া: বাশার আল-আসাদ

 

২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাশার আল-আসাদের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ দাবি ওঠে। এরপর তিনি ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন।

 

 

 

🇱🇰 শ্রীলঙ্কা: গোতাবায়া রাজাপাকসে

 

২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে জনরোষের মুখে পড়ে গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশত্যাগ করেন। প্রথমে তিনি মালদ্বীপ ও পরে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। এটি ছিল এশিয়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম নাটকীয় দেশত্যাগ।

 

 

 

🇦🇫 আফগানিস্তান: আশরাফ ঘানি

 

২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখল করলে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি কোন প্রতিরোধ গড়ে না তুলে রাতের আঁধারে কাবুল ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। তাঁর এই আচরণে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।

 

 

 

🇵🇰 পাকিস্তান: পারভেজ মোশাররফ

 

সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতা হারানোর পর দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। নানা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিনি চিকিৎসার অজুহাতে দেশত্যাগ করেন এবং শেষ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে থেকেই মৃত্যুবরণ করেন।

 

 

 

🇮🇩 ইন্দোনেশিয়া: সোহার্তো

 

দীর্ঘ ৩১ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার পর ১৯৯৮ সালে দুর্নীতি ও গণবিক্ষোভের মুখে ইন্দোনেশিয়ার স্বৈরশাসক সোহার্তো পদত্যাগে বাধ্য হন। পরে তিনি গোপনে পরিবারসহ দেশ ছাড়েন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির অভিযোগ ছিল।

 

 

🇭🇹 হাইতি: অ্যারিস্টাইড

 

দু’বার হাইতির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েও সামরিক অভ্যুত্থানে অপসারিত হন অ্যারিস্টাইড। ২০০৪ সালে মার্কিন হস্তক্ষেপে তাকে জোরপূর্বক দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। তিনি পরে দক্ষিণ আফ্রিকায় আশ্রয় নেন।

 

 

 

🇸🇩 সুদান: সাদিক আল-মাহদি

 

১৯৮৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান সুদানের প্রধানমন্ত্রী সাদিক আল-মাহদি। তিনি পরে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বিদেশে চলে যান। দীর্ঘ সময় পর দেশে ফিরেও আর রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারেননি।

 

 

🇮🇷 ইরান: মোহাম্মদ রেজা পাহলভি (শেষ শাহ)

 

ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা হারান এবং দেশত্যাগে বাধ্য হন। তিনি একাধিক দেশে ঘুরে মিশরে আশ্রয় নেন এবং সেখানেই মারা যান। এটি ছিল ২০ শতকের সবচেয়ে আলোচিত দেশত্যাগের একটি।

 

 

 

 

পরিশেষে এই তালিকা থেকে বোঝা যায়, রাজনৈতিক সংকট ও গণআন্দোলনের মুখে বিশ্বের যেকোনো ক্ষমতাধর নেতা যেকোনো সময়েই পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হলে দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। ইতিহাস প্রমাণ করে—

জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা সম্ভব হয় না।

 

 

 

জনপ্রিয়

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) ও আহলে বাইত এর স্বরণে পুরান ঢাকায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া বিশ্বের কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধান

প্রকাশের সময় : ১২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫

 

আতিকুর রহমান:-

 

বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে—চরম রাজনৈতিক সংকট, জনরোষ, অর্থনৈতিক দুরবস্থা কিংবা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অনেক রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান ক্ষমতা হারিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। কারো কারো এই দেশত্যাগ ছিলো গোপন ও নাটকীয়, আবার কারো কারো ছিলো প্রকাশ্য ও বিতর্কিত। নিচে তেমনি কিছু রাষ্ট্রপ্রধানের সংক্ষিপ্ত তালিকা তুলে ধরা হলো:

 

 

 

🇧🇩 বাংলাদেশ: শেখ হাসিনা

 

বর্তমানে বাংলাদেশে টানা ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা।তার সরকারের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন, স্বৈরাচারী আচরণ ও ভোটবিহীন নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি সমালোচনার ছিল। এরপর ২০২৪ সালে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে ওই বছরের ৫ আগষ্ট তিনি দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন।

 

 

 

🇨🇦 কানাডা: জাস্টিন ট্রুডো

 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নানা দুর্নীতির অভিযোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং জনমনে হতাশার কারণে তাঁকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে তিনি ২০২৫ সালে পদত্যাগ করেন।

 

 

 

🇸🇾 সিরিয়া: বাশার আল-আসাদ

 

২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বাশার আল-আসাদের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ দাবি ওঠে। এরপর তিনি ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন।

 

 

 

🇱🇰 শ্রীলঙ্কা: গোতাবায়া রাজাপাকসে

 

২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে জনরোষের মুখে পড়ে গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশত্যাগ করেন। প্রথমে তিনি মালদ্বীপ ও পরে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। এটি ছিল এশিয়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম নাটকীয় দেশত্যাগ।

 

 

 

🇦🇫 আফগানিস্তান: আশরাফ ঘানি

 

২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখল করলে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি কোন প্রতিরোধ গড়ে না তুলে রাতের আঁধারে কাবুল ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। তাঁর এই আচরণে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।

 

 

 

🇵🇰 পাকিস্তান: পারভেজ মোশাররফ

 

সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতা হারানোর পর দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। নানা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিনি চিকিৎসার অজুহাতে দেশত্যাগ করেন এবং শেষ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে থেকেই মৃত্যুবরণ করেন।

 

 

 

🇮🇩 ইন্দোনেশিয়া: সোহার্তো

 

দীর্ঘ ৩১ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার পর ১৯৯৮ সালে দুর্নীতি ও গণবিক্ষোভের মুখে ইন্দোনেশিয়ার স্বৈরশাসক সোহার্তো পদত্যাগে বাধ্য হন। পরে তিনি গোপনে পরিবারসহ দেশ ছাড়েন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির অভিযোগ ছিল।

 

 

🇭🇹 হাইতি: অ্যারিস্টাইড

 

দু’বার হাইতির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েও সামরিক অভ্যুত্থানে অপসারিত হন অ্যারিস্টাইড। ২০০৪ সালে মার্কিন হস্তক্ষেপে তাকে জোরপূর্বক দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। তিনি পরে দক্ষিণ আফ্রিকায় আশ্রয় নেন।

 

 

 

🇸🇩 সুদান: সাদিক আল-মাহদি

 

১৯৮৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান সুদানের প্রধানমন্ত্রী সাদিক আল-মাহদি। তিনি পরে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বিদেশে চলে যান। দীর্ঘ সময় পর দেশে ফিরেও আর রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারেননি।

 

 

🇮🇷 ইরান: মোহাম্মদ রেজা পাহলভি (শেষ শাহ)

 

ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা হারান এবং দেশত্যাগে বাধ্য হন। তিনি একাধিক দেশে ঘুরে মিশরে আশ্রয় নেন এবং সেখানেই মারা যান। এটি ছিল ২০ শতকের সবচেয়ে আলোচিত দেশত্যাগের একটি।

 

 

 

 

পরিশেষে এই তালিকা থেকে বোঝা যায়, রাজনৈতিক সংকট ও গণআন্দোলনের মুখে বিশ্বের যেকোনো ক্ষমতাধর নেতা যেকোনো সময়েই পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হলে দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। ইতিহাস প্রমাণ করে—

জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা সম্ভব হয় না।